Word Power Made Easy by Norman Lewis An Essential Book for all who love to build their vocabulary

Wednesday, December 28, 2011

মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে ফিরছে নম্বর, মেধাতালিকা

মার্কশিটে থাকবে গ্রেডও
মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে ফিরছে নম্বর, মেধাতালিকা
০১২-তেই মোট নম্বর এবং মেধাতালিকার ঐতিহ্যে ফিরে যাচ্ছে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক। নতুন বছর থেকে পরীক্ষার্থীর মার্কশিটে বিষয়ভিত্তিক নম্বর-বিষয়ভিত্তিক গ্রেড-মোট নম্বর-সার্বিক গ্রেড, সবই থাকবে বলে স্থির হয়েছে।
বছর কয়েক ধরেই এ রাজ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিটে মোট নম্বর থাকছিল না। বিষয়ভিত্তিক নম্বরের পাশাপাশি থাকছিল বিষয়ভিত্তিক গ্রেড। লক্ষ্য ছিল, ধীরে ধীরে মার্কশিট থেকে নম্বরকে বিদায় জানিয়ে পুরোপুরি গ্রেড-নির্ভর মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা। সরকারের যুক্তি ছিল, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা নম্বরের তুলনায় গ্রেডকেই বিজ্ঞানভিত্তিক মনে করে। এতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অবাঞ্ছিত প্রতিযোগিতা কমবে।
কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতায় এসে নয়া সরকার পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। চলতি বছরেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিন সরকারি ভাবে মেধাতালিকা প্রকাশ না হলেও সম্ভাব্য স্থানাধিকারীদের টেলিফোনে অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে সরকারি অনুষ্ঠানে তাদের সংবর্ধনাও জানানো হয়। তার পরেই ২৪ অগস্ট উচ্চ মাধ্যমিক সংসদের বৈঠকে মোট নম্বর ও মেধাতালিকা ফেরানো নিয়ে আলোচনা হয়। ৩১ অক্টোবর মহাকরণে শিক্ষামন্ত্রী, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীও তাতে সায় দেন। স্কুলশিক্ষা দফতরের পাঠ্যক্রম কমিটিও মোট নম্বর দেওয়ার পক্ষপাতী। তাদের ব্যাখ্যা, বিষয়ভিত্তিক নম্বর ও গ্রেড পাশাপাশি দেওয়ার মানে হয় না। এতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমে না। তা ছাড়া, উঁচু ক্লাসে ভর্তির ক্ষেত্রে নম্বরই প্রধান বিবেচ্য হয়। তাই পুরোপুরি গ্রেড চালু করা না গেলে তা বন্ধ করে দেওয়াই ভাল। তবে মেধাতালিকা প্রকাশ করা সম্পর্কে কমিটি কিছু সুপারিশ করেনি।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠছে শিক্ষা দফতরেই। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “আগামী বছর যে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেবে, তারা যখন ভর্তি হয়েছিল, তখন তো এই পদ্ধতি ছিল না। মাঝপথে এ ভাবে নিয়ম বদল করা উচিত কি না, তা নিয়ে ভাবার দরকার ছিল।” এই ব্যাপারে দেশের ছবিটা কিন্তু রাজ্যের সিদ্ধান্তের ঠিক বিপরীত। দেশের সব স্কুল বোর্ডের সংগঠন ‘কবসে’ কয়েক বছর আগেই সিদ্ধান্ত নেয়, ক্রমশ গ্রেডের দিকে গিয়ে এক সময় মার্কশিট থেকে নম্বরকে বিদায় জানানো হবে। কারণ হিসাবে বলা হয়, দু’এক নম্বরের ব্যবধানে পরীক্ষার্থীদের মেধার ফারাক বিচার করা যায় না। বতর্মানে আইসিএসই, সিবিএসই বিষয়ভিত্তিক নম্বর ও গ্রেড দেয়। মোট নম্বর বা সার্বিক গ্রেড তাদের মার্কশিটে থাকে না। তা হলে পশ্চিমবঙ্গ হঠাৎ বিপরীত দিকে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল কেন? স্কুলশিক্ষা সচিব বিক্রম সেন বলেন, “পরীক্ষার্থীরা এতে উৎসাহিত বোধ করবে। রাজ্য সরকার ভাল ফলের স্বীকৃতি দিতে চায় বলেই মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে।”
এ প্রসঙ্গে পাঠ্যক্রম কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুনন্দ সান্যাল বলেন, “গ্রেডের দিকে যেতেই হবে। ঘটনাচক্রে আগের সরকার সেই পদ্ধতি শুরু করে গিয়েছিল। তা হলে আবার পিছনে হাঁটার প্রয়োজন কেন হল, তা তো বুঝতে পারছি না।” ওই কমিটিরই আর এক প্রবীণ সদস্য মর্মর মুখোপাধ্যায় মনে করেন কোনও ছাত্র ভাল পরীক্ষা দিয়েছে, নাকি খারাপ, সেটা বলা যায়। কিন্তু কোনও পরীক্ষকই নিশ্চিত করে বলে দিতে পারেন না যে, এক জন ছাত্র দশে পাঁচ বা ছয় নম্বরই পাবে। কিছুতেই তার কম বা বেশি নয়। মর্মরবাবুর আক্ষেপ, “রাজনীতিক বা অভিভাবকদের এটা বোঝানো যাবে না!”